অনেক কিছু দেখতে দেখতে আসল জায়গা থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে শিশুর ভবিষ্যত। শিক্ষা ব্যবস্থা আজ অবক্ষয়ের শিকার। অদক্ষ শিক্ষক, ইতিহাস বিকৃতি, স্কুল বন্ধ, স্কুল ছুট শিশুরা, ছুটির দিন বাড়ছে, কেমন যেন তালগোল পাকানো। এসবের জন্য বাবা, মা, আত্মীয় স্বজনদের চিন্তা বাড়ছে। সত্যিই এটা নিয়ে একটু ভাবা দরকার। বেদের যুগ থেকেই জেনে আসছে মানুষ, “সংগচ্ছধ্বং সং বদধ্বং সং বো মনা়ংসি জানতাম।”
আমরা সাধারণ জনগণ। লক্ষ্য ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো। কারণ ওরাই যে, বিজ্ঞান মনস্ক নতুন এক সমাজ গড়বে, অপসংস্কৃতি ও কুসংস্কার মুক্ত এক সমাজ। কিন্তু হায় ওদের কপাল ! ওরা আজ ভালো নেই।
শিক্ষা ব্যবস্থা সেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তখনকার দিনে মুনি ঋষিরা জানতেন রাজা মন্ত্রীদের ছেলেদের শিক্ষিত হতে হবে। নাহলে দেশের শাসন ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। বাড়বে মূর্খের স্বর্গ। ওদের হাতে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হয়।
আসল কথা শিশুর শিক্ষা ব্যবস্থায় থাকে, মুক্ত সক্রিয়তার চাহিদা। অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবাধ সঞ্চালনে শিশুর মানসিক চাহিদা তৃপ্ত হয়। ওরা পরনির্ভরতা থেকে মুক্তি পেতে, অবচেতনে লুকিয়ে থাকা নিজস্ব ভালবাসাকে আঁকড়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। গড়ে ওঠে উন্নত মানসিক গঠন, সম্বন্ধ সম্পর্কিত চিন্তা চেতনা। অবশ্যই যা ছাত্র ছাত্রীরা পায় সুশিক্ষিত শিক্ষকদের কাছ থেকে। বর্তমানে যা জানতে পারছি, তাতে আর যাই হোক অদক্ষ শিক্ষক দিয়ে তা সম্ভব নয়। সমাজের প্রতিটি মানুষের মুখে একটাই কথা, ভাষা, গণিত, দর্শন ইত্যাদির জ্ঞান ছাড়া সূক্ষ্ম ধারণা গড়ে উঠতে পারে না। আর বিচারের ধ্যান ধারণা না থাকলে মনের উপর স্বল্প বুদ্ধি মানসিক প্রক্রিয়া অন্য পথে চালিত হয়।
আমাদের আশংকা দ্রুত এ সমাজ অবক্ষয়ের দিকেই চলেছে। এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করে ও সিলেবাসের খুশি মত পরিবর্তন না ঘটিয়ে, শিশুর শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষাতে জোর দেওয়া। শিশুই জাতির ভবিষ্যৎ। চারদিকে আর্ত চিৎকার ‘শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ হয়ে গেল’ আমাদের সবাইকে শিশুর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটু ভাবতে হবে। প্রাণহীন ভুল শিক্ষা বন্ধ হোক। তা যদি না হয় মনোবিজ্ঞানীদের দ্বিতীয় সূত্র মাথা তুলে দাঁড়াবে। দ্রুত শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসুক অনুকূল পরিবেশ।