অষ্টম শ্রেণি
তোমরা দুর্গাপুজার জন্য চাঁদা তুলছ তাই না? এবছর শুনছি বিশাল প্যান্ডেল হবে! মেলাও হবে বেশ জমজমাট। শুনলাম কিছু অনুদানও পাচ্ছো কোথাও থেকে। তোমরা এতো এতো টাকা দিয়ে প্যান্ডেল বানাবে, মেলা বসবে! জানো তো; এমন অনেক মানুষ আছে যারা সারা বছর একটাও নতুন জামা পায় না। লোকের ফেলে দেওয়া নোংরা ছেঁড়া জামা-ই তাদের পরনের বসন।
তাদের রান্নাঘর জানো? ওহো; না না তোমরা কীকরে জানবে? তোমরা তো প্যান্ডেল প্যান্ডেলেই আলো জ্বালাতে ব্যস্ত। ওদের মত নিকশ অন্ধকার চোরাবালিতে ধীরে ধীরে ঢুকতে থাকা মানুষদের ঘরে তো তোমরা আলো জ্বালাও না, আসলে জ্বালাতে চাও না।
ওদের রোজকার রান্নাঘর সেই বড় বড় মানুষদের, তোমাদের মত বাবুদের বাড়ির ডাস্টবিন। ওনাদের নষ্ট করা, এঁটো ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া খাবারই ওদের রোজকার খাদ্য। আচ্ছা, এবছর পুজোর চাঁদা থেকে কিছুটা অংশ বাঁচিয়ে, কিছুটা সাধারণ প্যান্ডেল করে ওদের একটু সাহায্য করে দেখোই না। মেলার ভীড়, প্যান্ডেলে ভীড় আরও বাড়বে। যারা একটা নতুন জামা না পাওয়ায় পুজোর রঙিল আলোয় নিজেদের রাঙাতে চায় না, অন্ধকার ঘরেই ঢুকে থাকে, তারা বেরিয়ে আসবে। এই সর্ব্বজনীন পুজোয় একবার সবাই সামিল হোক না। তারপর দেখো, মা দুর্গার মূর্তির ওপরা আর আলো দেওয়ার প্রয়োজন হবে না, সে এমনিতেই উজ্জ্বল হয়ে যাবে। ওদের একবার একটা নতুন পোশাক দাও। মুখে একটু অন্ন তুলে দাও। দেখো পৃথিবী তোমার দিকে ঘুরে তাকাবে। বিশাল প্যান্ডেল বানিয়ে কতই বা নাম হয়? কতজনই বা মনে রাখে! কিন্তু ওদের উপকার করে দেখো ওরা সারাজীবন মনে রাখবে। চিরকাল ঋণি থাকবে তোমাদের কাছে। সব শেষে বিরাট এক শান্তি পাবে... মানবিক।